সাহিত্যতত্ত্বে প্লেটো ও আরিস্টটল: অবরোধ থেকে মুক্তিমুক্তি
সাহিত্যতত্ত্বের সঙ্গে সাহিত্যসৃষ্টির সম্পর্ক অব্যবহিত, সৃষ্টির পরপরেই জিজ্ঞাসার জন্ম। সাহিত্যের সমালোচনায় তত্ত্বের একটি ভূমিকা সবসময়ই ছিল, আছে এবং থাকবে। সাহিত্য ও তত্ত্ব দুটি বিপরীত বিষয় হলেও একটির সাথে আরেকটির সম্পর্ক রয়েছে। এ সম্পর্ক এক অপরের উপরে নির্ভরশীল। তবে তত্ত্বের চেয়ে সবসময় সাহিত্যই বেশি স্বাধীন ছিল; এবং আছে। তবুও একটি প্রশ্ন সবসময় ¯্রােতের মতো আসতে থাকে, আর তা হল, “সাহিত্য আগে না তত্ত্ব আগে?” এ প্রশ্ন এখনও রয়ে গেছে অমীমাংসায়; হয়তোবা থেকেও যাবে! তবে সংখ্যাগরিষ্ঠের মতে মত রাখলে, ‘তত্ত্ব আগে নয়, সাহিত্যই আগে।’- এই মতটিই জিতে যায়। সেই জয়ীর সাথে মত রেখে গ্রীক-ধ্রুপদী সাহিত্যতত্ত্বের দুই মহীরুহ, প্লেটো (৪২৭-৩৪৭ ) ও আরিস্টটলের (৩৮৪–৩২২ ) সাহিত্যতত্ত্বের বিশ্লেষণে এগনোই সবচেযে যুক্তিযুক্ত। অন্যান্য বিষয়ের মতো প্রাচীন গ্রীসে সাহিত্যের বিষযটিও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হতো। এমনকি সাহিত্যের বিভিন্ন রূপের একটি বড় অংশের উদ্ভব হয়েছে গ্রীসে।মানুষের সৃজনক্ষমতা অপরিসীম শক্তিধর, সেকথা খ্রিস্টের জন্মের চারশ বছর আগেও উপলব্ধি করা গিয়েছিল। উপলব্ধি করেছিলেন গ্রিসের বিখ্যাত দার্শনিক প্লেটো। জ্ঞান-বিজ্ঞান অনুশীলনে তখনই সমৃদ্ধ এই দেশটিতে বিষয় নিয়ে আর কেউ ভাবনা-চিন্তা করেছিলেন কিনা তা জানা যায়নি, অন্তত তার লিখিত কোন সাক্ষ্য পাওয়া যায়নি। সেজন্য প্লেটোকেই প্রথম সাহিত্যতাত্ত্বিক অভিধা দেওয়া যায়। তাও প্লেটো এ সম্পর্কে স্বতন্ত্র কোনো বই লেখেননি, যেমন লিখেছিলেন তাঁর ছাত্র আরিস্টটল। মূলত প্লেটো কোনো একক গ্রীসে সাহিত্যের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেননি। তাঁর সাহিত্য চিন্তা তাঁর রচিত বিভিন্ন গ্রীসে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। সেগুলো এক জায়গায় করলে একটি সুনির্দিষ্ট ধারনা পাওয়া যায়।প্লেটোর সাথে সমসাময়িক উ”চ শ্রেণীর মানুষ ও নগর প্রশাসকদের একটি ভালো সম্পর্ক ছিলো। তিনি ব্যক্তিজীবনে প্রদর্শন করেছেন নানারকম ক্রীড়াকৌশল, সামর্থ্যরে পরিচয় দিয়েছিলেন যুদ্ধক্ষেত্রেও। অর্থাৎ প্লেটো বেড়ে উঠেছিলেন এ্যাথেনীয় সংস্কৃতির আলো-বাতাসে। এই প্রভাব পড়েছে তাঁর সাহিত্যেও তত্তেও¡। ফলে প্রশাসক সহ উ”চ শ্রেণীর প্রতি পক্ষপাত তাঁর সাহিত্যতত্ত্বে সমানে এসেছে। যা সাহিত্যের ক্ষেত্রে একধরনের অবরোধের সৃষ্টি করেছে, যেমনটা করে রাষ্ট্র। প্লেটো নিজেও কবিতা লিখতেন, কবিতা পছন্দ করতেন। তারপরেও কবিদের প্রতি খড়গহস্ত হওয়ার কারণ কী? তিনি তাঁর সাহিত্যের আলোচনায় এ বিষয় আলোকপাত করেছেন। তিনি মূলত তাঁর, ইঅন ( ৩৮৭ ), রিপাবলিক ( ৩৮৭-৩৬০ ), লাইসিস (৩৮৭) গ্রীসে ’ সাহিত্যকে নানা বিষয়ের সাথে তুলনা কওে আলোচনা করেছেন। প্লেটো’র প্রথম আপত্তি শিল্প সাহিত্যে এমন সব আবেগ ও অনুভূতিকে উজ্জ্বল করে রূপ দেওয়া হয় যার ফলে নাগরিকদের মন রাষ্ট্রবিধানের বাইরে চলে যায়। ফলে সমাজে একধরনের বিশঙ্খলার সৃষ্টি হয়। তাছাড়া সাহিত্যে যে ধরনের দেব-দেবীর কাহিনী প্রচলিত আছে তা সমাজ ও ধর্ম উভয় ক্ষেত্রেই বিপদজনক ও বিশৃঙ্খলাকর। কারণ সাহিত্য দেবতাদের নিয়ে যে সমস্ত কদর্য কাহিনীর বর্ণনা দেয় তা ধর্মীয় মূল্যবোধের ক্ষেত্রেও বিপদজনক।সাহিত্যের সামাজিক ও ধর্মীয় যে বিষয় নিয়ে প্লেটো যে সমস্ত কথা বলেছেন তা পরবর্তী সময়ের নীতিনিষ্ঠদের মুখেও নতুন করে উ”চারিত হযেছে। তাই সমসময়ে গ্রীসের সামাজিক সা¯’্য নিয়ে প্লেটো’র ভাবনা অমূলক নয়; বরং মূলক। বিশেষ করে দেব-দেবীদের নিয়ে কবিরা যে সমস্ত বিষয় লিখে; তা প্লেটো ভালো চোখে দেখেননি। তাই পুস্তক প্রকাশের পূর্বে তা নিরীক্ষণের কথা বলেছেন। অর্থাৎ, তিনিই প্রথম বইয়ের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। তাঁর মতে, সব বই পাঠকের পড়া উচিৎ নয়। তাই বই প্রকাশের উপর রাষ্ট্রের ভূমিকা থাকা উচিৎ।প্লেটো সাহিত্যের ক্ষেত্রে আর যে বিষয়টিকে খুব গুরুত্ব দিয়েছেন তা হল, মাইমেসিস । এটিকে একটি দার্শনিক দিক হিসেবেও বিবেচনা করা যেতে পারে। তাঁর মতে সাহিত্যিকরা যা সৃষ্টি করে তা মূলত অনুকরণ । অনুকরণ কখনো সত্য হয়না। সুতরাং অনুকৃত বিষয়গুলি সব দৃশ্যমায়া তাই তাঁর মতে সাহিত্যসৃষ্টি সমর্থনযোগ্য নয়। এক্ষেত্রে প্লেটো’র যে যুক্তি তাকে বলা হয় ‘থিয়োরি অব আইডিয়াজ’ । এর মূল কথা হ”েছ এই যে আমাদের বাস্তব ও ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য পৃথিবী, একে অতিক্রম করে এক আইডিয়া বা আদর্শ ধারণার জগৎ আছে। সেই ধারণার জগতে প্রতীয়মান হয় সমস্ত অস্তিত্ব এর নিখুঁত ও যথার্থ অবয়ব। সুতরাং এই পার্থিব পৃথিবীর সবকিছুই সেই আদর্শ ধারণার অসম্পূর্ণ নকল বা অনুকরণ । কবি-শিল্পীরা এই অসম্পূর্ণ নকল-অস্তিত্বের নির্মাণ করেন। তা তৃতীয় হাতের নকল । তাই এই নকল বা অনুকরণের ঘোর-বিরোধীতা করেছেন প্লেটো। শ্রেণীভেদের বিষয় প্লেটো কোনো সময় মেনে নিতে পারেননি; তাঁর সময়ে, তাঁর নগররাষ্ট্রে সম্ভবও ছিলোনা। কারণ হিসেবে সংখ্যালঘুর হাতেই সেসময় নগররাষ্ট্রের ক্ষমতা ছিলো। অর্থাৎ সংখ্যাগরিষ্ঠ নয়, সংখ্যালঘুর হাতেই ছিলো নগররাষ্ট্রের ক্ষমতা। তাছাড়া দাসপ্রথার মতো প্রথা বিদ্যমানতো ছিলোই। তাঁর মতে, সাহিত্য সমাজের এই উঁচু-নিচের প্রভেদ ভেঙে ফেলতে সবচেয়ে বড় অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। তাই শ্রেণীভেদ প্রথা টিকিয়ে রাখার জন্য কোনভাবেই সাহিত্যকে তিনি ভালো চোখে দেখেননি। তাঁর মতে নিম্মশ্রেণী যদি উ”চশ্রেণীর মানুষের ভালো-মন্দ অনুসরণ করে তবে সে সমাজে কোন সামঞ্জস্য থাকবেনা। তাই যার যার ¯’ানে তার তার থাকা উচিৎ। ছুতার মিস্ত্রি যদি মুচি হয় তাহলে সমাজের মানুষের দূরাব¯’ার শেষ থাকবেনা। অনেকে এই মতকে ফ্যাসিস্ট মত হিসেবে অভিহিত করেছেন। তবে মদ্দা কথা, তৎকালীন সময়ে তাঁর এই মতের উপযোগিতা ছিল, এই মত প্লেটো’র মতো মানুষের এড়িয়ে চলা সম্ভব ছিলোনা।সাহিত্যের তত্ত্বভিত্তিক প্রথম একক বই আরিস্টটলের। তাঁর বইয়ের মূল নাম পেরি পোইয়েতিফেস, ইংরেজিতে পোয়েটিকস এবং বাংলায় কাব্যতত্ত্ব। প্লেটো’র মতো আরিস্টটল যুদ্ধ বা ক্রীড়ার মধ্য দিয়ে জীবনের কোন অংশ পার করেননি। তিনি তাঁর জীবনের অধিকাংশ সময়ই কাটিয়েছেন বিদ্যা অর্জন করে। জন্মও হয়েছে অভিজাত বংশে। নানা বিদ্যার জনক তিনি। তিনিই প্রথম গ্রীক দার্শনিক যিনি বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে কোন বিষয় সম্পর্কে যুক্তি দিতেন। সাহিত্যের ক্ষেত্রেও তিনি তেমনটাই করেছেন। কোন একটি শ্রেণীর কোলঘেষে তিনি সাহিত্যকে বিচার করেননি।আরিস্টটল তাঁর গুরু প্লেটো’র অনুকরণের বিষয় মেনে নিয়েছেন। তবে কাব্য যে ব¯‘র অনুকরণ তা সত্য কি মিথ্যা এ নিয়ে তিনি কোন উদ্বেগ প্রকাশ করেননি। কেননা অনুকরণ মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি, সহজাত প্রবণতা। তাই অনুকরণের বিষয় সত্য হোক আর মিথ্যাই হোক, অনুকরণ মানুষ করবেই। মানুষ নিজে অনুকরণ করতে ভালোবাসে এবং অন্যের অনুকরন দেখে আনন্দ পায়। আরও একটি বিষয় সম্পর্কে তিনি তথ্য উপ¯’াপন করেছেন। মানুষের ভেতরে যে ছন্দস্পন্দন ও সুরসঙ্গতিতে আছে তাতে মানুষ আনন্দ পায়। যে ছন্দস্পন্দন ও সুরসঙ্গতি কাব্যের অন্যতম উপাদান। এবং এই উপাদান আছে বলেই মানুষ কাব্য পাঠে এতো আগ্রহী। মানুষ যেহেতু দেবতা হয়ে যাবেনা কোনদিন, এমনকি পশুও হয়ে যাবেনা। তাই মানুষের মধ্যে এই বিষয় থাকবেই।প্লেটো’র মতো সাহিত্যের সত্য-মিথ্যার হিসাব আরিস্টটল স্বীকার করেন। আরিস্টটর স্বীকার করেন, সাহিত্যে মিথ্যার ¯’ান গৌণ নয়। আরিস্টটলের মতে, হোমার কবিদের মধ্যে যেমন শ্রেষ্ঠ, মিথ্যুকের মধ্যেও তেমনি। কিš‘, সাহিত্যের মিথ্যার একটি বৈশিষ্ট্য আছে। “অবিশ্বাস্য সম্ভবের চাইতে কবির পক্ষপাত থাকা উচিৎ বিশ্বাস্য অসম্ভবের প্রতি।” তাই আরিস্টটরের মতে, সত্য-মিথ্যা মূল বিষয় নয়, মূল বিষয় বিশ্বাস অর্জন। এক্ষেত্রে বহু পরে স্যামুয়েল টেইলর কোলরি ১৭৭২-১৮৩৪) বলেছেন, “কাব্যের সত্য আর কিছুই নয়, পাঠককে বাধ্য করা তাঁর অবিশ্বাসকে সাময়িকভাবে ¯’গিত রাখতে।” আরিস্টটলের মতে মিথ্যা বলারও একটা আবশ্যিকতা আছে। সাহিত্যে অনাবশ্যক মিথ্যা বলে কিছু নেই, মূলত এটাই সত্য। সাহিত্যে মিথ্যা খাঁটি সত্যের চেয়েও সর্বজনীন। প্লেটো’র মতে সাহিত্য মোটামুটি ইতিহাস হওয়া উচিৎ। কিš‘, আরিস্টটল তাঁর গুরুর মতকে সমর্থন করেননি। বরং প্লেটোর এই মতের বিরুদ্ধ নতুন মত গেড়ে বসেছেন। ইতিহাস রচিত হয় যা ঘটছে তাই নিয়ে। অপরদিকে সাহিত্যের বিষয় যা ঘটতে পারে, সম্ভাব্য বিষয়। ইতিহাসের একটি নির্দিষ্ট সময় ও ¯’ান রয়েছে, সাহিত্যের তা নেই। সাহিত্যে সময় ও ¯’ানের কোন সীমানা নেই। সাহিত্য যেকোন সময় ও ¯’ান নিয়ে গড়ে উঠতে পারে। এর ফলে সাহিত্য পায় সার্বজনীনতা। তাই আরিস্টটল সাহিত্যকে তাৎ¯’ানিক ও তাৎক্ষণিক বিশেষের পরিবর্তে সাহিত্যকে সর্ব¯ সর্বকালীন হিসেবে অভিহিত করেছেন।নীতির ব্যাপারেও প্লেটোর সাথে আরিস্টটলের যেমন মিল পাওয়া যায়, তেমনি বিরোধ বা পার্থক্যও খুঁজে পাওয়া যায়। অর্থাৎ সমাজের নীতির ব্যাপারে গুরুর সাথে শিষ্যও সমান সচেতন। প্লেটো নির্বিশেষ সকল সাহিত্যিক রূপকে নীতিবিরোধী হিসেবে অভিহিত করেছেন। এ বিষয়ে আরিস্টটল সব রূপকে নীতিবিরোধী হিসেবে অভিহিত করেননি। আরিস্টটল কমেডিকে নিচুমানের বা নীতিবিরোধী সাহিত্যিক রূপ হিসেবে বিবেচনা করেছেন। তাঁর মতে কমেডি হীণতর মানুষের অনুসরণ। তাই তিনি কমেডিকে নিচু চোখে দেখেছেন, এবং এর বিরুদ্ধচারণ করেছেন। কিš‘, ট্রাজেডিকে তিনি উ”চ আসন দিয়েছেন। ট্রাজেডির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিনি কথা বলেছেন। তিনি ট্রাজেডির নায়ক সম্পর্কে তাঁর সুস্পষ্ট মত প্রকাশ করেছেন। ইউরিপিদিস তাঁর নাটকে মেনুলাসকে কলঙ্কিত করেছেন, যে বিষয় আরিস্টটল ভালো ভাবে নেননি। বরং, এর বিরুদ্ধে থেকে তিনি ইউরিপিদিস ও তাঁর নাটকের সমালোচনা করেছেন।প্লেটো ও আরিস্টটলের দৃষ্টিভঙ্গির একটা বিষয় তাঁদের মতবাদের পার্থক্যের অন্যতম অন্তরায়। অন্তর্মুখী প্লেটো কবির আত্মার দিক অবলোকন করেছেন, বহির্মুখী আরিস্টটল অবলোকন করেছেন কবির সৃষ্টিকে। কোন ধরনের মানুষ কবিতা লিখতে পারে, এই বিষয়ই প্লেটোর মূল বিবেচ্য বিষয়। অর্থাৎ, কবিতার স্বভাব ও প্রকৃতি কেমন- এটাই আরিস্টটলের মূল জিজ্ঞাসা ও বিবেচ্য বিষয়। সাহিত্যের বিশ্লেষণে প্লেটো যেখানে চরম ভাববাদীতার পরিচয় দিয়েছেন, ঠিক তার বিপরীতে আরিস্টটল সাহিত্য বিশ্লেষণে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি ব্যবহার করেছেন। অন্যান্য বিষয়ের মতো আরিস্টটল সাহিত্যের বিষয়ও পরীক্ষণের মাধ্যমে বিশেষøণ করেছেন।প্লেটো ও আরিস্টটলের সাহিত্য বিশ্লেষণে যদি গ্রীসের দার্শনিকদের মধ্যে প্রাজ্ঞ ও প্রাচীন দার্শনিক পিথাগোরাসে’র ( ৫৭০-৪৯৫ ) উপপাদ্যভিত্তিক দর্শনের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। পিথাগোরাস যে উপপাদ্যের কথা বলেছেন তা মূলত বাস্তবে; অথাৎ ক্ষেত্রে প্রমাণ করতে গেলে প্রমাণিত হয়না। কিš‘ খাতা-কলমে প্রমাণ সম্ভব। প্লেটো মূলত পিথাগোরাসের এই দর্শনকে সামনে রেখে সাহিত্যে তত্ত্ব আরোপ করেছেন। এই অনুসরণের ফলে একটি ভাববাদী সাহিত্য তত্ত্বের উদ্ভব হয়েছে। যা সাহিত্যে একধরনের অবরোধের মতো পরি¯ি’তির সৃষ্টি করেছে। অপরদিকে আরিস্টটল পিথাগোরাসের ঠিক উল্টে অব¯’ান করেছেন। অর্থাৎ, ভাববাদিতাকে গ্রহণ করে তার বাস্তব পরিণতির বিষয়ে কথা বলেছেন, এবং সাহিত্যের আলোচনা করেছেন।পরিশেষে বলা যায়, সাহিত্যের বিষয়ে প্রথম আলোচনা শুরু করেন প্লেটো। যা সাহিত্যের জন্য ছিল মূলত অবরোধের মতো। এর মূল কারণ সমসময়ে গ্রীসের প্রশাসন, প্রশাসক ও ভাববাদী দর্শনের সাথে প্লেটোর গভীর সম্পর্ক। এই সম্পর্কের ফলে তাঁর সাহিত্যতত্ত্ব এমন রূপ নিয়েছে। অপরদিকে সাহিত্যতত্ত্বের আরেক মহীরুহ আরিস্টটল ভাববাদীতার ঊর্ধ্বে গিয়ে, বিচার-বিশ্লেষণের মাধ্যমে সেই অবরোধ ভেঙে দিয়েছেন। ফলে সাহিত্য পেয়েছে নতুন মাত্রা।
No comments