র‌্যাম বা মেগাপিক্সেল বেশি মানেই ভালো স্মার্টফোন নয়



অনেক ক্ষেত্রেই বলা হয়, অতিরিক্ত কখনোই যথেষ্ট নয়। জীবনের বহু বিষয়ে কথাটি সত্য হতে পারে। কিন্তু প্রযুক্তিপণ্যের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য নয়। বিশেষ করে স্মার্টফোন নির্মাতারা ক্রেতাদের চাহিদার অজুহাতে ভুল ধারণা ছড়িয়ে দিচ্ছেন। বেশি মানেই ভালো বলে অপপ্রচার চালান তারা। ফোনের স্পেসিফিকেশন যত বেশি হবে, ক্রেতারা মনে করেন পণ্যটি তত ভালো।

তাইওয়ানের প্রসেসর নির্মাতা মিডিয়াটেক জানায়, মানুষ মনে করে অক্টা-কোর প্রসেসর কোয়াড-কোর প্রসেসরের চেয়ে ভালো। বিভিন্ন কোরের প্রসেসর নিয়ে মাতামাতি হলেও কোয়ালকম জানায়, তাদের কোয়াড-কোর স্ন্যাপড্রাগন ৮২০ প্রসেসরটি এযাবৎকালের সবচেয়ে ভালোগুলোর একটি।

ক্যামেরার রেজ্যুলেশনের বিষয়টি মিথে পরিণত হয়েছে। বেশি রেজ্যুলেশন মানেই ভালো ক্যামেরা নয়। মেগাপিক্সেল কখনো ভালো ছবির শর্ত নয়। আসলে উচ্চ রেজ্যুলেশনের পর্দা বেশি উজ্জ্বল ছবি দেখায়। কিন্তু এর একটি গ্রহণযোগ্য সীমা রয়েছে।
স্যামসাং গ্যালাক্সি এস৭ এবং এস৭ এজ-এর ক্যামেরায় সেরা মানের ছবি তোলা যায়। অথচ লেনোভো ভাইব এক্স৩-এর ২১ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরার ছবি তুলনামূলক অনেক বাজে মানের। নকিয়ার ৪১ মেগাপিক্সেলের পিওরভিউ ক্যামেরায় যখন ৮ মেগাপিক্সেল পিওরভিউ মোডে চালানো হয়, তখন সবচেয়ে ভালো ছবি ওঠে।

র‌্যামের বিষয় নিয়েও একই সমস্যা চলে। যত বেশি র‌্যাম তত দ্রুত ফোন চলবে বলে মনে করা হয়। কিন্তু নির্মাতাদের আরো বেশি শক্তির ব্যাটারি ও স্টোরেজ দেওয়া উচিত।

জিয়াওমি এমআই৫ নামের ফোনে আধুনিক ফ্ল্যাগশিপ স্মার্টফোনের সব স্পেসিফিকেশনই দেওয়া রয়েছে। ৩ জিবি র‌্যাম আর ফুল-এইচডি পর্দা নিয়ে দারুণ এক ফোন এটি। কিন্তু এর সবকিছু শতভাগ কাজ করে না। তবে দামের তুলনায় ভালো মানের একটি ফোন।

এ ক্ষেত্রে অ্যাপল একটি উদাহরণ হতে পারে। তারা দেখে স্মার্টফোনে আসলে কি লাগবে? তাদের স্পেসিফিকেশন অন্যের সঙ্গে তুলনা করলে আইফোনকে দুর্বল মনে হবে। আসলে কি তাই? এরা পৃথিবীর অন্যতম সেরা ফোন নির্মাণ করে।
দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, সাধারণত ক্রেতাদের মনে বেশি স্পেসিফিকেশন মানেই বেশি ভালো ফোনের ধারণা ঢুকে গেছে। অথচ এর মাধ্যমে কখনো গুণগত মান নির্ধারিত হয় না। এটা আসলে মার্কেটিংয়ের একটি উপায়।

No comments

Powered by Blogger.